পেহেলগামে হামলাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে হামলা চালায় ভারত। প্রতিবাদে উচ্চগতির ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভারতীয় বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। এ হামলার পর দিল্লি জানায়, তারা আর উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে চায় না। শনিবার (১০ মে) এক বিশেষ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছে ভারত। ব্রিফিংয়ে নেতৃত্ব দেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি, সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর (আইএএফ) উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং।
তারা বলেন, শুক্রবার রাতে উধমপুর, পাঠানকোট এবং বাথিন্ডায় ভারতীয় বিমান ঘাঁটিগুলিতে আক্রমণ করেছে পাকিস্তান। তবে এই হামলায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেননি তারা। কর্নেল সোফিয়া কুরেশি দাবি করেন, পাকিস্তান ভারতের বিমানঘাঁটিগুলোর দিকে উচ্চগতির ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এর ফলে সীমান্ত অঞ্চলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এ সময় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, উত্তেজনা সৃষ্টি এবং সংঘাতের জন্য সম্পূর্ণ দায়ী পাকিস্তান। ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল প্রতিরক্ষামূলক ও দায়িত্বশীল। আমি আগেও বহুবার বলেছি উসকানি ও উত্তেজনা সৃষ্টির মূল উৎস পাকিস্তানের পদক্ষেপগুলো। ভারত শুধু প্রতিরক্ষা করেছে এবং সেই উসকানির জবাবে সংযত ও দায়িত্বশীল প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল পেহেলগামে হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হন। এর জন্য পাকিস্তানের ওপর দায় চাপিয়েছে ভারত। তবে তা নাকচ করেছে পাকিস্তান। এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তান ও দেশটির নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে অভিযান চালায় ভারত। ওই রাতেই দেশটির পাঁচটি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি করে পাকিস্তান। এরই মধ্যে করাচি, লাহোর, রাওয়ালপিন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলের তৈরি ভারতের ২৯ ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরিফ চৌধুরী।
এদিকে, ভারতে পাল্টা সামরিক হামলা শুরু করেছে পাকিস্তান। শনিবার (১০ মে) ভোরে অপারেশন ‘বুনিয়ানুম মারসুস’ নামের এই হামলা শুরু হয়। যদিও উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে পাকিস্তানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চেষ্টা নস্যাৎ করে দেওয়ার দাবি করে ভারতের প্রতিরক্ষা বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও রাডার লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে লাহোরে একটি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। এ ছাড়া নিজেদের যুদ্ধবিমান হারানোর কথা যদিও স্বীকার করেনি ভারত। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, চীনের তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে মঙ্গলবার রাতে ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান। সেগুলোর মধ্যে অন্তত একটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমান ছিল।
সূত্র : এনডিটিভি