বাংলাদেশের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে ওয়াকফো আইনের বিরুদ্ধে চলা সহিংসতায়, সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিরাপত্তা রক্ষায় এবার ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সেখানে কিছু রাজনৈতিক দল ভারতীয় মুসলিমদের সাথে বাংলাদেশের নামও জড়ানোর চেষ্টা করছে, যা নিয়ে গভীর প্রতিবাদ জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বিগত সময়ে ভারতের মিথ্যা দাবি এবং বাড়াবাড়ির ঘটনায় বাংলাদেশ প্রায়ই প্রতিবাদ জানিয়েছে, তবে এবার ঢাকার পক্ষ থেকে নরেন্দ্র মোদির সরকারের কাছে মুসলিমদের সুরক্ষার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি এসেছে। সম্প্রতি, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলিমরা ওয়াকফো আইনের সংশোধনির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা প্রভৃতি রাজ্যে। কিন্তু এই প্রতিবাদগুলি ধীরে ধীরে জাতিগত সহিংসতায় রূপ নেয়, আর মুর্শিদাবাদে সংঘর্ষের ফলে কয়েকজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় মুসলিমদের দাবি, তারা হিন্দুদের বিরুদ্ধে কোনো বিক্ষোভ করেননি, বরং আইনটির বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ করছিলেন। কিন্তু এই সহিংসতায় বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে রাজনৈতিক স্বার্থের বাস্তবায়নে উস্কানি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় রাজ্যে দাঙ্গার সঙ্গে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টতার দাবি তুলেন। এতে ভারতীয় সরকারের কিছু পক্ষ থেকে মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশকে জড়ানোর চেষ্টা করা হয়, যা তীব্র প্রতিবাদের সৃষ্টি করেছে।
এই বিষয়ে, বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে সমালোচনা জানানো হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক বিবৃতিতে জানান, মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশের নাম জড়ানোর যেকোনো চেষ্টা আমরা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। মুসলিমদের উপর হামলা এবং তাদের জানমালের নিরাপত্তাহানির ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার, এবং ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন সংখ্যালঘু মুসলিমদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
এদিকে, ভারতের বর্তমান সরকার কর্তৃক পাশ করা ওয়াকফো আইনের বিতর্কিত সংশোধনী সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকার উদ্বিগ্ন। অভিযোগ উঠেছে যে, এই আইনটি মুসলিমদের অধীনে থাকা ওয়াকফো সম্পত্তি জবরদখলের উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে। এর ফলে ভারতে মুসলিমদের উপর আরো নির্যাতন ও দমনপীড়নের আশঙ্কা করা হচ্ছে, এবং এই কারণে আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে মুসলিমরা।