হিজরী বর্ষের দ্বাদশ ও পবিত্র মাস জিলহজ—এই মাস মুসলিম উম্মাহর কাছে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আর এই মাসেরই ৯ তারিখ, যা ইয়াওমুল আরাফা নামে পরিচিত, ইসলামী শরিয়তে এক বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন দিন। এ দিনেই হাজীরা সমবেত হন মক্কার নিকটবর্তী আরাফাত ময়দানে, যা হজের মূল অংশ এবং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রোকন।
আরাফার দিন শুধু হাজীদের জন্য নয়, সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের দিন। এই দিনে আল্লাহ তাআলা তাঁর অসংখ্য বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।
হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “আমি আশাবাদী যে, আরাফার দিনের রোযা বিগত এক বছর ও আগত এক বছরের গুনাহ মাফ করে দিবে।”— (সহিহ মুসলিম)
এ দিন দোয়া কবুল হওয়ার এক মহাসুযোগ। হাদীসে বলা হয়েছে, “শ্রেষ্ঠ দোয়া হলো আরাফার দিনের দোয়া।”
এবং রাসূল (সা.) নিজে ও পূর্ববর্তী নবীদের পড়া সর্বোত্তম দোয়াটি হলো: “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ও হুয়া আলা কুল্লি শাই’ইন কাদির।”
(অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই, তিনি এক, তাঁর কোনো শরিক নেই। সার্বভৌমত্ব ও সমস্ত প্রশংসা তাঁর, এবং তিনি সব কিছুর উপর সর্বক্ষমতাধর।)
আরাফার দিন সম্পর্কে আরও এক অনন্য হাদীসে এসেছে: “এই দিনে আল্লাহ দুনিয়ার সবচেয়ে নিকটবর্তী হন, আর বান্দাদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করে বলেন— ‘দেখো আমার বান্দারা ধূলিধূসরিত হয়ে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছে, তারা আমার রহমতের আশায় এসেছে, অথচ আমার আযাব দেখেনি।’”
এই দিনটি তাই শুধু স্মরণীয় নয়, বরং আত্মশুদ্ধি, তওবা ও আল্লাহর কাছে ফিরে যাওয়ার এক বিরল সুযোগ।
মুসলিম বিশ্বের জন্য আরাফার দিন এক অফুরন্ত রহমতের বারতা নিয়ে আসে—হোক সে হজ পালনে আরাফাতে উপস্থিত, কিংবা নিজ ঘরে বসে রোজা, দোয়া ও ইবাদতে লিপ্ত।