মোবাইল প্রেমের করুণ পরিণতি! বিয়ের দুই দিনের মাথায় রিয়ার মৃত্যু

টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) উপজেলার কালীদাস ঠকানিয়াপাড়া এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত নববধূর নাম রিয়া আক্তার (১৯)। সে ওই এলাকার সৌদি প্রবাসী নীরব মিয়ার স্ত্রী ছিলেন।

জানা গেছে, প্রায় ছয় মাস আগে সখীপুর উপজেলার কালীদাস ঠকানিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী নীরব মিয়ার (২৭) সঙ্গে রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার আমিরুল শাহর মেয়ে রিয়া আক্তারের মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক হয়। নীরব সৌদি আরব থাকা অবস্থায়ই রিয়া তার বাড়িতে আসা-যাওয়া শুরু করেন। ১৬ এপ্রিল নীরব মিয়া সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে সরাসরি প্রেমিকা রিয়ার বাড়িতে ওঠেন। ২৩ এপ্রিল পারিবারিকভাবে বিয়ে করে তারা সখীপুরে ফিরে আসেন। শুক্রবার বিকেলে রিয়া তার বাবাকে স্বামীর বাড়ি থেকে বিদায় দিয়ে নিজের ঘরেই অবস্থান করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ ভেতর থেকে দরজা বন্ধ দেখে পরিবারের লোকজন তাকে ডাকাডাকি শুরু করেন। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে একপর্যায়ে বেড়া কেটে ঘরে প্রবেশ করলে ওই রিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

নীরব মিয়ার ফুফাতো ভাই শিপন আহমেদ বলেন, মেয়ের বাবা-মা পৃথক থাকেন। ছোটবেলা থেকে মেয়েটি তার নানার বাড়ি বড় হয়েছে। আমার মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে ফোনের মাধ্যমে চার বছর ধরে সম্পর্ক। প্রায় ১১ মাস আগে মেয়েটি মামাতো ভাইদের বাড়িতে আসে। বাড়িতে আসলে ফোনের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। মেয়েটি ৬ মাস ছেলের বাড়িতে ছিল। মামাতো ভাই দেশে ফেরার পর গত ২৩ এপ্রিল পুনরায় বিয়ে দেয়া হয়। এই বিয়েতে মেয়ের বাবা রাজি থাকলেও মা রাজি ছিল না। গতকাল শুক্রবার দুপুরে মেয়েটির সঙ্গে মায়ের কথা হয়। ধারণা করছি মেয়েটি মায়ের সঙ্গে কথা বলার পর অভিমান করেই আত্মহত্যা করেছে। এদিকে আমার ভাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে আছে। এ বিষয়ে আমরা কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি।

সখীপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) তামজিদ মোমেন তনয় বলেন, শুক্রবার রাতে নববধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক সুরতহাল তদন্তে আত্মহত্যা বলেই মনে হয়েছে। রাতেই মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার বিকেল ৩টার দিকে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *