মেয়ের হবু স্বামীর সঙ্গে পালালেন শাশুড়ি, বললেন— আমিই তাকে বিয়ে করব

দিন দশেক পরেই ছিল মেয়ের বিয়ে। সবকিছুই ঠিক, কেবল বিয়েটাই বাকি। এর মধ্যেই মেয়ের বাগদত্তা তথা হবু জামাইয়ের সঙ্গে পালিয়ে গেলেন কনের মা। এই ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হলে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন ওই নারী। পুলিশের কাছে তিনি বলেছেন— যাই হোক না কেন, তিনি ওই ছেলেকেই বিয়ে করবেন। এদিকে ওই নারীর সঙ্গে পালিয়ে যাওয়া যুবকও আত্মসমর্পণ করেছেন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাতে পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও ইন্ডিয়া টুডে।

এনডিটিভি বলছে, উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের এক মা — যিনি বিয়ের মাত্র দশ দিন আগে নিজের মেয়ের বাগদত্তার সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন — তিনি বুধবার পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। ঘটনাটি গত সপ্তাহে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। অভিযুক্ত ওই মায়ের নাম স্বপ্না। আত্মসমর্পণের পর তিনি জানান, স্বামী ও মেয়ের হাতে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হওয়ায় তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। স্বপ্না বলেন, “আমার স্বামী মদ খেতেন, মারধর করতেন। আমার মেয়ে নিজেও আমার সঙ্গে ঝগড়া করত। তাই আমি এই পথ বেছে নিয়েছি।”

স্বপ্নার মেয়ের বাগদত্তা তথা হবু জামাইয়ের নাম রাহুল কুমার। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের সময় স্বপ্না জানান, “যাই হোক না কেন, আমি এখন রাহুলের সঙ্গেই থাকব। আমি ওকে বিয়ে করব।” তিনি আরও জানান, পুলিশ হস্তক্ষেপ করার পর তিনি ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। এনডিটিভি বলছে, স্বপ্নার মেয়ের হবু বর রাহুল কুমার এদিন স্বপ্নার সঙ্গে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। আলিগড় জেলার দাদোন থানার বাসিন্দা রাহুল ও স্বপ্না গত ৬ এপ্রিল পালিয়ে যান, যার ফলে দুই পরিবারেই চরম বিস্ময় ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। স্বপ্নার স্বামী জিতেন্দ্র কুমার তখন অভিযোগ করেছিলেন, “আমার স্ত্রী প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাহুলের সঙ্গে ফোনে কথা বলত।”

অন্যদিকে স্বপ্নার মেয়ে শিবানী অভিযোগ করেছেন, তার মা পালানোর সময় বাড়ির আলমারি থেকে সাড়ে ৩ লাখ রুপি ও ৫ লাখ রুপির গয়না নিয়ে গিয়েছেন। তবে স্বপ্না এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার সঙ্গে শুধু একটি মোবাইল আর মাত্র ২০০ রুপি ছিল। বাকিটা মিথ্যা।” এদিকে রাহুল জানিয়েছেন, স্বপ্না তাকে পালিয়ে যেতে প্ররোচিত করেন। তার দাবি, “তিনি আমাকে বলেন— যদি আমি আলিগড় বাসস্ট্যান্ডে না যাই, তিনি আত্মহত্যা করবেন। তাই আমি গিয়েছিলাম। আমরা প্রথমে লখনৌ, পরে মুজফ্ফরপুরে যাই।” পুলিশ অনুসন্ধান চালানো শুরু করলে তারা ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আরও দাবি করেন, স্বপ্নার স্বামী এবং তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে (স্বপ্না) “নির্যাতন” করত।

যখন সাংবাদিকরা রাহুলকে জিজ্ঞেস করেন— তিনি সত্যিই স্বপ্নাকে বিয়ে করবেন কিনা, তখন তিনি একটু দোটানায় পড়েন। শুরুতে “তেমন কিছু নয়” বললেও পরে থেমে থেমে বলেন, “হ্যাঁ, বিয়ে করব।” অন্যদিকে স্বপ্নার আত্মীয়রা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি (স্বপ্না) আর তাদের ঘরে ফিরতে পারবেন না। স্বপ্নার দুলাভাই দিনেশ বলেন, “আমরা ওকে আর চাই না। আমরা শুধু চাই, ও যা টাকা আর গয়না নিয়ে গেছে, তা ফেরত দিক।” দিনেশ আরও বলেন, “ও যা করেছে, তার জন্য ওর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমার ভাইয়েরা এবং ভাইঝি এখনও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।” তিনি স্বপ্নার স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগও অস্বীকার করেন। তার দাবি, “আমি নিজের চোখে কখনও এমন কিছু দেখিনি, আমি ওদের বাড়িতে মাসের পর মাস থেকেছি।” অবশ্য পুলিশ এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *