ফের চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে মডেল মেঘনা আলমের সহযোগী কাওয়াই গ্রুপের সিইও এবং সঞ্জনা ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক দেওয়ান সমিরকে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম রিমান্ডে নেওয়ার এই নির্দেশ দেন।
সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের প্রেমের ফাঁদে ফেলার অভিযোগে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় করা প্রতারণা ও চাঁদা দাবির মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে শেষে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পরিদর্শক আক্তার মোর্শেদ পুনরায় তাকে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত চার দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ঢাকা মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে ১৭ এপ্রিল এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ১৫ এপ্রিল ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ আবদুল আলিম মেঘনা আলম, দেওয়ান সমির ও আরও দুজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
রিমান্ড শেষে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় দেওয়ান সমির সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা ধৈর্য ধরুন, সঠিক ফল আসবে। আমি যদি অন্যায় করে থাকি, রাষ্ট্র থেকে যদি শাস্তি দেয় তা মেনে নেব।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেঘনা আদালতে বলেছে তার একটা মাত্র পুরুষ। তিনি হলেন সৌদি রাষ্ট্রদূত। আমি তার বয়ফ্রেন্ড না।
সৌদি রাষ্ট্রদূতকে চেনেন না বা জানেন না বলে দাবি করে দেওয়ান সমির বলেন,আমি সঠিক বিচার চাই। রাষ্ট্রদূতকে আনা হোক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজিকে আনা হোক, মেঘনাকেও আনা হোক। আমি এ মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। আত্মীয়-স্বজনদের বলেছি মেঘনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি কোনো জাতীয় চক্রান্তে নেই। আমি একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা। দীর্ঘদিন জাপানে ছিলাম।
মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্তরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য, যারা সুন্দরী নারীদের মাধ্যমে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনী ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে ব্ল্যাকমেল করে অর্থ আদায় করত।
এজাহারে আরও বলা হয়, গত ২৯ মার্চ ধানমন্ডির একটি জাপানি রেস্টুরেন্টে এক কূটনীতিকের কাছ থেকে ৫ মিলিয়ন ডলার (৫০ লাখ ডলার) চাঁদা আদায়ের পরিকল্পনায় বৈঠক করে তারা।
প্রসঙ্গত, ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার নিজ বাসা থেকে ৯ এপ্রিল রাতে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১০ এপ্রিল আদালত তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
১৩ এপ্রিল হাইকোর্ট একটি রুল জারি করে জানতে চান, বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমের গ্রেপ্তার কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। মেঘনা আলমের গ্রেপ্তার ও আটক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। অন্যদিকে ১১ এপ্রিল দেওয়ান সমিরকে গ্রেপ্তার করে ভাটারা থানার এক মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।