ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি পবিত্র হজ, যা প্রতিবছর জিলহজ মাসের শুরুতে পালিত হয়। এবারের হজ যাত্রার মধ্যেই ঘটেছে এক অভাবনীয় ঘটনা, যা অনেককে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে— আছে কি সত্যিই অলৌকিক কিছু?
ঘটনাটি লিবিয়া থেকে হজে রওনা হওয়া আমির আল মাহাদী মনসুর গাদ্দাফিকে ঘিরে। ধর্মীয় বিশ্বাস ও হজ পালনের দৃঢ় নিয়ত নিয়ে লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাজধানীর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান আমির। সব প্রস্তুতি শেষ, কিন্তু বাধা আসে তার নাম ঘিরেই। নামের শেষাংশে ‘গাদ্দাফি’ থাকায় নিরাপত্তা সন্দেহে ইমিগ্রেশনে আটকে দেওয়া হয় তাকে। একসময়ের আলোচিত লিবিয়ান শাসক মোয়াম্মার গাদ্দাফির নাম হওয়ায় বিভ্রান্তি ও জটিলতা তৈরি হয়।
এই সময়ে অন্য যাত্রীরা একে একে বিমানে উঠে পড়লেও, আমির তখনো দাঁড়িয়ে ছিলেন অনিশ্চয়তার মধ্যে। অবশেষে যখন ইমিগ্রেশনের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়, তখন দেখা যায় বিমানটির দরজা ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। পাইলটের স্পষ্ট নির্দেশ—দ্বার আর খোলা যাবে না। ফলে বিমানে ওঠা হলো না আমিরের।
কিন্তু এখানেই শুরু হয় আশ্চর্যজনক ঘটনা। আমিরকে রেখে যাত্রা শুরু করা সেই বিমানটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আবারও ফিরে আসে বিমানবন্দরে। কিন্তু সেখানেও আমিরকে উঠতে দেওয়া হয়নি। ফের উড়ে যায় বিমানটি। কিন্তু আশ্চর্যভাবে আবারও যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দেয়। বাধ্য হয়ে দ্বিতীয়বারও অবতরণ করে বিমানটি।
এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। বিমানের ভিতরে ছড়িয়ে পড়ে নীরবতা, যেন কিছু একটার অপেক্ষা করছে সবাই। ঠিক তখনই ক্যাপ্টেনের ঘোষণা—“আমিরকে ছাড়া এই বিমান আর এক পাও এগোবে না।” এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই যেন বদলে যায় বিমানবন্দরের পরিবেশও। ‘গাদ্দাফি’ নামটি আর বাধা নয়, বরং হয়ে ওঠে বিশ্বাসের প্রতীক।
জরুরি ভিত্তিতে আমিরকে তৃতীয়বার বিমানে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয়। এবার আর কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায় না। নির্ধারিত গন্তব্য সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে উড়ে যায় বিমানটি, আমিরকে নিয়েই।
পরে স্থানীয় গণমাধ্যমকে আমির জানান, “আমি জানতাম, যদি আমার নিয়ত সত্যিই হজ হয়, তবে কেউ আমাকে আটকাতে পারবে না। সবই আল্লাহর ইচ্ছায় হয়।”
এই রহস্যময় ঘটনাটি এখন সামাজিক মাধ্যমে ও মানুষের আলোচনায়—অলৌকিক কিছু কি এখনও ঘটে? শুধু প্রযুক্তি নয়, কখনো কখনো যেন নিয়তই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে।